প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ বাংলা ২য় পত্রের প্রশ্নোত্তর ধারাবাহিকভাবে দেওয়া হলো।
প্রশ্ন: ব্যাকরণ কাকে বলে?
উত্তর: ব্যাকরণ: ব্যাকরণের যথার্থ পরিচয় প্রকাশের জন্য ডক্টর সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের সংজ্ঞাটিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাঁর মতে, যে শাস্ত্রে কোনো ভাষাকে বিশ্লেষণ করে তার স্বরূপ, প্রকৃতি ও প্রয়োগরীতি বুঝিয়ে দেওয়া হয়, সে শাস্ত্রকে বলে সে ভাষার ব্যাকরণ।
# অন্যভাবে বলা যায়, যে শাস্ত্রে কোনো ভাষাকে বিশ্লেষণ করে তার স্বরূপ, প্রকৃতি ও প্রয়োগরীতি নির্ণয় করা হয় এবং তার সাহাযে্য শুদ্ধাশুদ্ধি নির্ধারণ করে ভাষাকে শুদ্ধরূপে লিখতে, পড়তে ও বলতে পারা যায়, তাকে ব্যাকরণ বলে।
# ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হকের মতে, যে শাস্ত্রের দ্বারা ভাষাকে বিশ্লেষণ করে এর বিবিধ অংশের পারস্পরিক সম্বন্ধ নির্ণয় করা যায় এবং ভাষা রচনাকালে আবশ্যকমতো সেই নির্ণীত তত্ত্ব ও তথ্য প্রয়োগ সম্ভবপর হয়ে ওঠে, তাই-ই ব্যাকরণ।
# ডক্টর মুনীর চৌধুরীর মতে, যে শাস্ত্রে কোনো ভাষার বিভিন্ন উপাদানের প্রকৃতি ও স্বরূপের বিচার-বিশ্লেষণ করা হয় এবং বিভিন্ন উপাদানের সম্পর্ক নির্ণয় ও প্রয়োগবিধি বিশদভাবে আলোচিত হয়, তাকে ব্যাকরণ বলে।

প্রশ্ন: ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করো।
উত্তর: ‘ব্যাকরণ’ (বি+আ+কৃ+অন) শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ বিশ্লেষণ। ভাষা বিশ্লেষণ করাই ব্যাকরণের কাজ। সুতরাং যে শাস্ত্রে কোনো ভাষার উপাদানের প্রকৃতি ও স্বরূপ বিশ্লেষণ করা হয় এবং বিভিন্ন উপাদানের সম্পর্ক নির্ণয় ও প্রয়োগবিধি আলোচিত হয়, তাকে ব্যাকরণ বলে।
ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজনীয়তা: পৃথিবীর প্রতিটি ভাষা একটি নিয়মবিধির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ভাষার এ নিয়ম জানার জন্যই ব্যাকরণ পাঠ অপরিহার্য। একটা ভাষা সম্বন্ধে সম্পূর্ণ জ্ঞান লাভের জন্যই সে ভাষার ব্যাকরণ জানতে হবে। ব্যাকরণ পাঠ করে ভাষার বিভিন্ন উপাদানের প্রকৃতি ও স্বরূপের বিচার-বিশ্লেষণ করা হয় এবং সেগুলোর সুষ্ঠু ও সঠিক ব্যবহার বা প্রয়োগবিধি সম্বন্ধে জ্ঞানলাভ করা যায়। এ ছাড়া ব্যাকরণ জানা থাকলে লেখায় ও কথায় ভাষা প্রয়োগের সময় শুদ্ধাশুদ্ধি নির্ধারণ সহজতর হয়। বাগধারা, ছন্দ ও অলংকার প্রকরণও ব্যাকরণের অন্তভু‌র্ক্ত বিষয়।

প্রশ্ন: বাংলা ব্যাকরণ কাকে বলে?
উত্তর: বাংলা ব্যাকরণ: যে শাস্ত্রে বাংলা ভাষার স্বরূপ ও প্রকৃতি সবদিক দিয়ে আলোচনা করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, তাকে বাংলা ভাষার ব্যাকরণ বা বাংলা ব্যাকরণ বলে।
# ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, যে শাস্ত্র জানলে বাংলা ভাষা শুদ্ধরূপে লিখতে, পড়তে ও বলতে পারা যায়, তার নাম বাংলা ব্যাকরণ।
# ডক্টর সুকুমার সেনের মতে, যে শাস্ত্রে বাংলা ভাষার স্বরূপ ও প্রকৃতির বিচার ও বিশ্লেষণ আছে এবং যে শাস্ত্রে জ্ঞান থাকলে বাংলা ভাষা শুদ্ধরূপে বলতে, লিখতে ও শিখতে পারা যায়, তাকে বাংলা ভাষার ব্যাকরণ বলে।
বৈশিষ্ট্য: ব্যাকরণ শব্দের অর্থ বিশেষভাবে বিশ্লেষণ। শব্দটি গঠিত হয়েছে এভাবে: বি+আ+কৃ বা কর+অন অর্থাৎ বিশেষ এবং সম্যকরূপে বিশ্লেষণ করা।

Post a Comment