অধ্যায় ৮

প্রিয় শিক্ষার্থী, তোমাদের প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়ের ৮ম অধ্যায় থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর আলোচনা করা হলো। ধারাবাহিক এ আলোচনায় আমরা অধ্যায়টির সম্ভাব্য সকল প্রশ্ন আলোচনা করার চেষ্টা করবো।

মহাবিশ্ব

রচনামূলক প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন : মহাবিশ্ব সম্পর্কে তোমার ধারণা লিখ।

উত্তর : পৃথিবী আমাদের বাসভূমি। এটি সূর্যের একটি গ্রহ। আমাদের ঘিরে থাকা অসীম স্থান বা মহাবিশ্বের একটি অতি ক্ষুদ্র কণা হলো পৃথিবী। সুতরাং আমাদের ঘিরে বা পৃথিবীকে ঘিরে যা কিছু আছে তাদের নিয়েই হলো মহাবিশ্ব।

মহাবিশ্বের অধিকাংশ স্থান ফাঁকা। এই মহাবিশ্বে আমাদের পরিচিত একটি জগৎ হলো সৌরজগৎ। সূর্যও তার আটটি গ্রহ নিয়ে এই সৌরজগৎ গঠিত। মহাবিশ্বে রয়েছে অসংখ্য নক্ষত্র। এসব নক্ষত্র একত্রে ছায়পথ বা গ্যালাক্সি তৈরি করে। মহাবিশ্বে এরকম অসংখ্য ছায়াপথ রয়েছে। মহাবিশ্বের প্রতিটি গ্রহ, উপগ্রহ এবং নক্ষত্র পরস্পর থেকে বহুদূরে অবস্থিত এবং তা নির্দিষ্ট। পৃথিবী হচ্ছে আবিষ্কৃত মহাবিশ্বের একমাত্র বাসযোগ্য গ্রহ। পৃথিবীর একটি উপগ্রহ রয়েছে। এছাড়া, বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস, নেপচুন এগুলোও গ্রহ। তবে বিজ্ঞানীরা বলেন, মহাবিশ্ব প্রতিনিয়তই সম্প্রসারিত হচ্ছে। নতুন নতুন গ্রহ নক্ষত্রের খোঁজে বিজ্ঞানীরা এখনো গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

প্রশ্ন : সূর্য নক্ষত্রের বৈশিষ্ট্য লিখ।

উত্তর : সূর্য একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। পৃথিবীর সঙ্গে সূর্যের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। কারণ সূর্য থেকেই পৃথিবীর উৎপত্তি। সূর্যে কোনো কঠিন বা তরল পদার্থ নেই। সূর্য একটি বিশাল গ্যাসপি-। সূর্য খুবই উজ্জ্বল এবং অত্যন্ত উত্তপ্ত। সূর্যের প্রধান উপাদান হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাস। সূর্য থেকে পৃথিবীতে যে আলো ও তাপ আসে তা দিয়েই সব কাজকর্ম করা সম্ভব হয়। সূর্যকে কেন্দ্র করেই পৃথিবী নানা ধরনের গতিতে আবর্তন করে। এর একটিকে আহ্নিক গতি ও অন্যটিকে বার্ষিক গতি বলে। সূর্য থেকেই আমরা আমদের সব শক্তি পাই। পৃথিবীতে দিন-রাত্রির পরিবর্তন ঘটছে সূর্যের জন্য। এক কথায় পৃথিবীতে জীবের উদ্ভব ও বিকাশ সম্ভব হয়েছে সূর্যের কারণে।

প্রশ্ন : চিত্রসহ দিন রাত্রির কারণ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : আহ্নিক গতির কারণে পৃথিবীতে দিন-রাত্রি হয়ে থাকে। নিম্নে একটি পরীক্ষার মাধ্যমে বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করা হলো-
আহ্নিক গতির পরীক্ষা : প্রথমে একটি ভূগোলক বা গ্লোব এবং একটি আলোর উৎস নেই। আলোর উৎস হিসেবে মোমবাতি, কুপিবাতি, হারিকেন, টর্চলাইটের যে কোনো একটি হলেই হবে। লক্ষ্য করলে দেখা যায় ভূগোলকটির মাঝ বরাবর একটি শলাকা এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ভেদ করে আছে। এটিই পৃথিবীর কাল্পনিক অক্ষরেখা। এর চারদিকে পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে অবিরাম ঘুরছে।

একটি টেবিলের ওপর বা সমতল মেঝের ওপর বাতিটি জ্বালিয়ে রাখি। তারপর বাতির সামনে ভূগোলকটি বসাই। পরীক্ষণ কক্ষটি কম আলোকিত হলে ভালো হয়। এখানে আলোর উৎসটিকে সূর্য মনে করি এবং ভূগোলকটিকে পৃথিবী। লক্ষ্য করে দেখি, ভূগোলকটির যেদিকে আলোক আছে সেদিক আলোকিত হয়ে আছে। অন্য পাশটি আলো পাচ্ছে না বলে অন্ধকার হয়ে আছে। আলোকিত অংশটিকে দিন এবং অন্য অন্ধকারাচ্ছন্ন অংশটিকে রাত মনে করতে পারি। এবার যদি গোলকটিকে আস্তে আস্তে ঘোরাতে থাকি তাহলে দেখা যাবে আলোকিত অংশ ধীরে ধীরে অন্ধকারে যাচ্ছে এবং অন্ধকার অংশ আলোকিত হচ্ছে। এভাবেই পৃথিবীর অর্ধাংশে দিন এবং বাকি অর্ধাংশে রাত চলতে থাকে। এবার গ্লোবটিকে ঘুরিয়ে যখন বাংলাদেশ অঙ্কিত অংশটিকে আলোর দিকে নিয়ে আসি তখন দেখা গেল তার ঠিক বিপরীত দিক আমেরিকায় তখন রাত এবং ১২ ঘণ্টা পর ঠিক এর বিপরীত অবস্থা হবে। অতত্রব পৃথিবীর আহ্নিক গতির ফলে কোনো স্থানে যখন রাত তার ঠিক বিপরীত দিকে অবস্থিত স্থানে তখন দিন থাকে।

Post a Comment