লাইট ওয়েট কংক্রিট বা হালকা কংক্রিটঃ 

  • এই কংক্রিট এর একক আয়তনে ভর তুলনামুলক কম হয়। এই কংক্রিট এ যে এগ্রিগেট ব্যবহার করা হয়, তার ওজন কম হয়ে থাকে।
  • এর ঘনত্ব ২৪০ কেজি/ঘনমিটার (১৫ পাউন্ড/ঘনফুট) থেকে ১৮৫০ কেজি/ঘনমিটার (১১৫ পাউন্ড/ঘনফুট) light weight concrete is 240 kg/m³ (15pcf) -1850 kg/m³ (115 pcf).
  • ৭ এম.পি.এ বা ১০০০ পি.এস.আই থেকে ৪০ এম.পি.এ বা ৫৮০০ পি.এস.আই পর্যন্ত এর স্ট্রেন্থ বা শক্তি হয়ে থাকে।

এর ব্যবহার:

  • যেখানে অতিরিক্ত ভার বহন করতে হয়না সেখানে এই কংক্রিট ব্যবহার করা হয়। যেমন-প্যারাপেট, ফ্লোর উচু করা ইত্যাদি।

এয়ার এনট্রেইন কংক্রিটঃ

  • এই কংক্রিট আবিস্কার কংক্রিট প্রযুক্তিতে একটি বড় আবিস্কার। যেখানা freezing and thawing (বরফ হওয়া ও গলে যাওয়া )ক্রমশ হয় সেখানে এই কংক্রিট ব্যবহার করা হয়। .
  • বাতাশ প্রবেশ্য মিশ্রণ মিশিয়ে তৈনি করা হয়।
এই কংক্রিট নিচের কাজ করে থাকে।
  1. এটি পানির সার্ফেস টান কমিয়ে ফেলে যার কারনে বুদ বুদ তৈরি হয়।
  2. দ্বিতীয়ত এই বাতাশ প্রবেশ এজেন্ট কোলেসেকিং (একত্রিত হওয়া) প্রতিরোধ করে। যেমন বুদ বুদ একসাথে হওয়া। এই বাব্‌ল বা বুদ বুদ ১০ থেকে ১০০০ মাইক্রোমিটার হয়ে থাকে। এবং ১ মি:মি: এর থেকেও বড় বাতাশের ফাদ তৈরি হয়।

FREEZING AND THAWING:

কংক্রিট এর উপর প্রভাব অনুযায়ী দুই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে।
  1. কোংকরিট এর ভেতরের পানি যখন বরফ হয় তখন এর আয়তন 9-10% বেড়ে যায়। এবং এর আশেপাশে চাপ দেয়। যার ফলে ক্রাক দেখা যায়।
কিন্তু বাতাস প্রবেশ এজেন্ট থাকার কারণে এই বাতাস পানির আয়তন বৃদ্ধিতে কিছু জায়গা দেয়। যা কংক্রিট এর উপর অধিক চাপ কমিয়ে দেয়।
  1. দ্বিতীয়ত কোংকরিট কাঠামোতে দুই অংশ থাকে জমাট ও গলন। যেহেতু জমাট অংশে পানির পরিমান বেশি থাকে তাই পনি যেখানে কম সেখানে যাওয়ার চেষ্ট করে। যদি যেতে না পারে তখন ক্র্যাক বা ফাটল দেখা যায়
  • সাধারণ কংক্রিট বরফীয় আচরনের ৩-৪ মেয়াদের বেশি টিকে থাকতে পারে না। কিন্তু এই কংক্রিট ১০০ মেয়াদেও টিকতে পারে।.
এই কংক্রিট এর অসুবিধা:
  • সাধারণ কংক্রিট এর চেয়ে এই কংক্রিট এর শক্তি কম।

হাই পারফরমেন্স কংক্রিটঃ

এই কংক্রিট এ নিম্নের গুনাগুন থাকে

  • উচ্চ শক্তি
  • উচ্চ কার্যউপযোগীতা
  • দীর্ঘস্থায়ী টেকসই
  • সেগ্রিগেশন বা ছড়িয়ে পড়া ছাড়াই
  • অল্প সময়েই শক্তি অর্জন করে
  • দীর্ঘস্থায়ী মেকানিকাল গুনাগুন
  • তরল বা গ্যাস এর চলাচল.
  • ঘনত্ব
  • হাইড্রেশন এর তাপমাত্রা
  • টিকে থাকার ক্ষমতা.
  • আয়তন ঠিক রাখা, বা আয়তনের খুব বেশি পরিবর্তন হয় না
  • অনুকুল পরিবেশ এ টেকশই

প্রস্তুত পদ্ধতি

সতর্কতার সাথে এর উপাদান ব্যবহার কের মিক্স ডিজাইন এর মাধ্যমে এই কংক্রিট তৈরি করা যাই
  • এখানে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্য প্লাস্টিসাইজার ব্যবহার করা হয়। যার ফলে এতে ব্যবহুত পানি শুধুমাত্র হাইড্রেশনের কাজ করে
  • ফ্লাই এ্যস এবং সিলিকা গ্যাস সিমেন্ট এর সিমেন্ট এর মিনারেলত্ত্ব পরিবর্তন করে এবং ক্যালসিয়াম হাইড্রক্সাইড কমিয়ে ফেলে। ফ্লাই এ্যাস বল-বিয়ারিং হিসাবে কাজ করে এর কার্যউপযোগীতা বৃদ্ধি করে।
  • ২০- ২৫ শতাংশ ফ্লাই এ্যাস এবং বাকি ৭০ % সাধারণ পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট ব্যবাহার করা হয়।
  • যেহেতা বরফ এলাকাতে এর ব্যবহার সমস্যা হয় তাই এতে এয়ার এনট্রেইন ব্যবহার করা হয়

এই কংক্রিট এ নিম্নের গুনাগুন:

  • ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ পি.এস.আই শক্তি হয়ে থাকে।
  • পানির অনুপাতি ২৫ শতাংশে নামিয়া আনা যায়

হাই স্ট্রেন্থ কংক্রিটঃ

এই কংক্রিট এর চাপ শক্তি ৬০০০ পি.এস.আই এর বেশি হয়ে থাকে।
৩৫% বা তার নিচে এর পানির অনুপাত হয়ে থাকে।
সিলিকা গ্যাস ব্যবহার করা হয় সিমেন্ট এর মুক্ত ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড এর পরিবর্তন, যা কংক্রিট এর সিমেন্ট-এগ্রিগেট বন্ধন শক্তি কমিয়ে ফেলে।
কম পানি এবং সিলিকা গ্যাস ব্যবহার এর কারণে এর কার্যউপযোগীতা কমে যায়। যার কারণে এর ব্যবহার করা সমস্যা হয়। এ জন্য এতে সুপার প্লাস্টিসাইজার ব্যবহার করা হয়।
হাই স্ট্রেন্থ কংক্রিট এ অবশ্যই ভাল শক্তির এগ্রিগেট ব্যবহার করতে হবে।

নরমাল বা সাধারণ কংক্রিটঃ

শুধুমাত্র পানি, সিমেন্ট এবং এগ্রিগেট দিয়ে তৈরি কংক্রিটকে নরমাল বা সাধারণ কংক্রিট বলে। এর সেটিং টাইম ৩০-৯০ মিনিট, নির্ভর করে আবওহাওয়ার উপর, সিমেন্ট এর সুক্ষতার বা মিহিতার উপর। ৭ দিন থেকে এর শক্তি গঠন হওয়া শুরু করে এবং এই সময় শক্তি হয় সাধারণত ১০ এম.পি.এ (১৪৫০ পি.এস.আই) থেকে ৪০ এম.পি.এ ( ৫৮০০ পিএসআই)। ২৮ দিনে ৭৫% থেকে ৮০% শক্তি পাই। ৯০ দিনে ৯৫% শক্তি পায়।
সাধারণ কংক্রিট এর গুনাগুন:
১) এর স্ল্যাম্প সাধারণত ১-৪ ইঞ্চ হয়ে থাকে
২) ঘনত্ব ১৪০ থেকে ১৭৫ পি.এস.এফ ( প্রতি ঘনফুট পাউন্ড) হয়ে থাকে
৩) চাপ সহ্য ক্ষমতা অনেক কিন্তু টান সহ্য ক্ষমতা খুবই কম।
৪) বাতাসের পরিমান ১% থেকে ২%
৫) অনুকুল পরিবেশে এই কংক্রিট ব্যবহার করা যাবে না। যেমন: বরফাচ্ছন্ন এলাকা, চুল্লি এলাকাতে।

রোলার কম্প্যাক্টেড কংক্রিটঃ

  • রোলার কম্প্যাক্টেড কংক্রিট, অনেক সময় রোলক্রিট বলা হয়ে থাকে। মাটি সরানো বা পেভিং কাজের থেকে এই ধারণা নেয়া হয়েছে। স্বল্প সিমেন্টের কংক্রিট ব্যবহুত হয়।
  • এটি যেই তলে ব্যবহুত হবে সেখানে দেওয়ার পর রোলার দিয়ে চাপ দিয়ে কম্প্যাক্ট করা হয়।
  • উচ্চ ঘনত্বের কংক্রিট ব্লক তৈরি হয়।
  • এই কংক্রিট সাধারনত কংক্রিট পেভমেন্ট এ ব্যবহুত হয়।

পারভিয়াস কংক্রিটঃ

  • পারভিয়াস কংক্রিট এ ছিদ্রের জাল থাকে। যার ভেল বাতাস বা পানি এর মধ্যে দিয়ে চলাচল করতে পারে। যার ফলে সার্ফেস পানি বা ভুপৃষ্টের পানি নিচে চলে যেতে পারে যা সাধারণ কংক্রিট পারে না।
  • সকল অথবা কিছু সংখ্যক ফাইন এগ্রিগেট পরিত্যগের মাধ্যমে এই কংক্রিট তৈরি করা হয়। অবশিষ্ট এগ্রিগেট সামান্য পরিমান পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট দিয়ে আবদ্ধ করা হয়।
  • সেটিং পর পর এতে ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ পরিমান ফাকা / ফাপা অংশ থাকে যা পানি প্রবাহে সাহায্য করে।
  • এই কংক্রিট এর খুব একটা রক্ষনাবেক্ষন লাগে না। শুধুমাত্র ফাপা কাঠামো যাতে বন্ধ / জ্যাম না হয়ে যায় তার জন্য রক্ষনাবেক্ষন দরকার।
  • কনস্ট্রাকশন এর পুর্বে সাইট এর চারপাশে ড্রেইন রাখতে হবে যাতে করে কংক্রিট এর ফাপা অংশে ময়লা বা অন্যকিছু জমতে না পারে।

সেলফ কমপ্যাক্টিং কংক্রিটঃ

এই কংক্রিট এ কোন ভাইব্রেশন লাগে না। নিজস্ব ভারেই এটি কমপ্যাক্ট হয়ে থাকে। একে অনেক সময় সেলফ কনসোলিডেটেড কংক্রট বা ফ্লোইং কংক্রিট বলে। এই উচ্চ ক্ষমতার কংক্রিট। কিন্তু এই কংক্রিট এর কার্যউপযোগীতা বেশি।
এর প্রকারভেদ:
  • অত্যন্ত তারল্য, প্রবাহ ছকে সাধারণত ৬৫০-৭৫০ মি:মি:
  • কোন ভাইব্রেটর এর দরকার পড়ে না
  • সহজে স্থাপন করা যায়
  • পানিপাত হয়না এবঙ এগ্রিগেড এর বিচ্ছিন্নকরণও হয়না

এর ব্যবহার উপযোগিতা:

  • যেখানে ভাইব্রেশন করা সম্ভব না সেখানে এটি ব্যবহার করা হয়। যেমন: মাটির নিচে, গভীর কুপে বা সমুদ্রের নিচে
  • ৫০ শতাংশ মজুরী খরচ কমিয়ে দেয়
  • ৮০ শতাং দ্রুত ঢালা যায়

Post a Comment